Monday, August 11, 2014

এই বিবেকের শেষ কোথায়!

গত কয়েক দিনে মিডিয়ার সবচেয়ে বড় সংবাদ পিনাক-৬। ৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটের কাছে পদ্মা নদীতে তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় পিনাক-৬ লঞ্চ, যদিও সরকারীভাবে দাবী করা হচ্ছে সংখ্যা ১৮০ এর বেশী নয়। সংখ্যা যাই হোক, কথা তা নয়। 
একজন মানুষ হিসাবে দুঃখই পেলাম এতোগুলো মানুষ জীবিত অবস্থায় ডুবে গেল আর আমাদের সরকার একবারেই নিশ্চুপ। দোষতো কেউ নিচ্ছেই না, বরং সবাই গাঁজাখুরি কথা বলছে। যেখানে ফেরি ডুবির ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করল সেখানে আমাদের সরকার কী করল?




কিছুদিন আগে পত্রিকায় দেখলাম আমাদের মাননীয় যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, "পদ্মা নদীতে লঞ্চ ডুবির ঘটনায় নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবি অমূলক, এক্ষেত্রে তার কোন দোষ নেই। ওই লঞ্চ দুর্ঘটনার দায় সরকার এড়াতে পারে না। ওখানে ইন্সপেক্টরদের দায়িত্ব পালন করার কথা, কিন্তু তারা সেটা করেছে কীনা সেটা দেখবে নৌ মন্ত্রণালয়। আর তাছাড়া লঞ্চে ৮৫ জনের ধারণ ক্ষমতা থাকলেও শুনেছি ৩০০ জন যাত্রী লঞ্চে উঠেছিলো।"

যেখানে ঈদ উপলক্ষে স্বাভাবিক রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি আরও বিশেষ ব্যাবস্থা থাকার কথা, সেখানে কেউ দ্বায়িত্বই পালন করেনি। অথচ যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দাবী করছেন শাজাহান খানের কোন দোষ নেই। তিনি যদি মন্ত্রালয় নাই সামলাবেন তো মন্ত্রীত্বতের নামে আমাদের টাকা নেন কী করে?

শাজাহান খান নিজেরই মন্ত্রালয় সামলাতে পারেন না অথচ শুনলাম তোবার শ্রমিকদের বেতন নিয়ে মিটিং করছেন ঢাকায়। ডুবে যাওয়া লঞ্চের হদিস নেই, মানুষ আপনজনের খোজে দিনরাত ধরে পদ্মার পাড়ে বসে আছে। নিখোজ সংখ্যা এখনো সঠিকভাবে কেউ জানে না অথচ তিনি ঢাকায় মিটিং করছেন! আমার তার জ্ঞানবোধ নিয়ে সন্দেহ আছে।

এতো বড় ঘটনা ঘটে গেল, অথচ সরকার, বিরোধীদল ও বিএনপি কারও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ দেখলাম না। যদিও অনেককেই রাজনৈতিক স্বার্থে কথা বলতে দেখেছি।

এতো গেল মাননীয় সন্মানী রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের কথ। এবার দেশের গরু-ছাগলদের কথা। আসলেই আমার মাঝে মাঝে নিজেদের তাই মনে হয়। কিন্তু জানেন গ্রামে বাসার গরুটি মারা গেলেও বাড়ীর কর্তী খাবার খায় না। নির্মম হলেও সত্যি যে দেশের প্রায় সকল সিটই কোন না কোন কর্তীর দখলে কিন্তু তারা সবাই ঝাল চিকেন ফ্রাই দিয়ে পোলাও খেয়েছে সেদিও আর আজও।

আমাদের জীবনের মায়া কতোটুকু, যে এমন বাজী নিয়ে আমরা লঞ্চে উঠি। আপনি কার জন্য এতো কিছু করছেন? যার জন্য করছেন, একবার কী ভেবে দেখেছেন আপনার অবর্তমানে তাদের কী দষা হবে?

কাল সরকার হয়তো মৃত ব্যক্তিদের জন্য ৫০হাজার টাকা বরাদ্দ দিবে, কিন্তু এই টাকা কী আপনার বাবাকে তার সন্তান, সন্তানকে বাবার ভালবাসা, কাউকে মায়ের মমতা এনে দিবে?

ভাই, একটু দেরী হলে না হয় ক্ষতি হয়ে যাবে। কিন্তু জীবন হারালে কী হবে ভেবেছেন। হরতালে আগুন (আমি হরতাল বা হরতালে ভাংচুর সমর্থন করি না বা বিএনপির কর্মী নই) নিয়ে সব সরকার ও শুশীল ব্যাক্তিদের মাথা খারাপ হয়ে যায়। অথচ ৩০০ মানুষ, যাদের সবারই শেষ আকুতি ছিল বাচার তাদের নিয়ে তেমন কিছুই দেখলাম না।

আমি একজন প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র, যদিও পাবলিকের নই তবুও কিছু জানি। আমি সকল প্রকৌশল বিভাগের সাথে সম্পর্কিত মানুষের কাছে অনুরোধ করব কোনভাবেই এমন ত্রুটিপুর্ণ কিছুকে অনুমদন না দেয়। যে টাকার আপনার পরিবারের খাবার ও আনন্দের যোগান দেয় তা অন্যের জীবন কেড়ে নিবে। শুধু তাই নয় তা কারও পরিবারকে পথে বসাতে পারে।

সকল ভূল, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।

No comments:

Post a Comment

Thank You for your opinion.