Sunday, April 5, 2015

একজন পরিচ্ছনতাকর্মী ও কিছু বাস্তবতা||আসুন য্ব মানুষগুলো আমাদের জীবনকে সহজ ও সুন্দর করেছে তাদের প্রাপ্য সন্মানটুকু দেই

আমরা সারাজীবনই পড়ে গেলাম মানুষ ১৮০০০ সৃষ্টির সেরা জীব। এই সেরা জীবের মাঝেই রয়েছে সর্ব নিকৃষ্ট আচরণ প্রদর্ষণের আশ্চর্য এর প্রতিভা। 
রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কারণে মানব জাতির বিভক্তি অনেক আগেই থেকে, ধনী গরীবের বিভক্তি তার চেয়ে কম পুরানো নয়। গত জীবনে আমরা অনেক পরিবর্তন এনেছি, অনেক ভেদাভেদ ভেঙ্গে ফেলিছি কিন্তু আজও ধনী গরীবের দুরত্ব একই আছে বৈকি বেশী। 
যারা প্রাইভেট গাড়ী ছাড়া চলাফেরা করেন তাদের বরাবরই ময়লার ভ্যানের সাথে দেখা হয়েই যায়। ময়লার গাড়ী বা ভ্যান দেখলেই সবাই যেন নাক সিটকে নেন, আমিও নেই আর এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অস্বাভাবিক কাজটা কী জানেন যখন আপনি তাকে " এই ব্যাটা সাইটে যা" বলে বিদ্রুপ করেন। 
আপনি যে গন্ধটা ১০সেকেন্ড সহ্য করতে চাচ্ছেন সে গন্ধের বিশাল বোঝা দিনভর বয়ে নিয়ে চলেছে, শুধু আপনার বাড়ি ও চারপাশ পরিষ্কার রাখবে বলে। আমরাতো পারলে ময়লা জানাল দিয়ে রাস্তায় ফেলতে পারলেই যেন বাচি। অনেকেই বলবেন না এমনটি কী করা হয়, আমরাতো সব ময়লে ঝুড়িতে সাজিয়ে রাখি। হয়তোবা কিন্তু যখন কাজের কেউ থাকে না বা ময়লার ঝুড়িটা বাসায় থাকে না তখন। বিশেষ করে যারা, ঢাকায় ম্যাচে থাকেন আর বাসার খালা আসেন না, তখন আপনি কখনোই অস্বীকার করতে পারবেন না যে কখনো রাতের আধারে এমন কাজ করেননি বা কাজে সাহায্য করেননি। 
যে লোকটি সকালবেলা আপনার বাসায় এসে ময়লা নিয়ে যায়, তাকে কী আপনি চেনেন? অথচ বাসার কেয়ারটেকার, পাশের দোকানদার, পেপার হকার কাকে আপনি চেনেন না আপনি। আপনার জানারও দরকার হয় না, সত্যি হলেও আমিও জানি না। 
যে লোকটি আপনাকে আমাকে ও আমাদের চারপাশকে বসবাসযোগ্য রাখছে, তারা কী আমাদের কাছ থেকে একটু ভালবাসা পেতে পারে না। ভালবাসা নাই হোক একটু সহানুভূতির দাবিদারতো সে নিজেই। 
আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি জীবনে আর কোন ময়লাওলাকে গালি দিব না। মনে রাখবেন আপনার রান্নাঘরের নানা সুগন্ধি খাবারের উচ্ছিষ্ট বইতে বইতে তাদের নাকে কখনোই কোন সুগন্ধির সৃষ্টি হয় না। আসুন সমাজের এই গুরুত্বপুর্ণ অংশকে অবজ্ঞা না করে কিছুটা ভালবাসা দেই। আর তাদের সাহায্য করে সমাজটাকে ময়লামুক্ত করি ও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর সমাজ তৈরী করি।

No comments:

Post a Comment

Thank You for your opinion.